নামাজই পারে সব পাপ থেকে আমাদের রক্ষা করতে

নামাজ পাপ থেকে রক্ষা করে:
আমরা জানি, এর আগে যত জাতি ধ্বংস হয়েছে, তাদের মূল কারণ ছিল তারা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করেছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের যেহেতু শ্রেষ্ঠ উম্মত হওয়ার সৌভাগ্য দান করেছেন, তাই এ শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলতে হবে। আল্লাহর নির্দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি নির্দেশ হলো, ‘সালাত বা নামাজ’। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে ৮২ বার মানুষকে নামাজ কায়েম করতে বলেছেন।
আল্লাহ তায়ালা নামাজের প্রতি এত বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, যা অন্য কোনো বিষয়ের প্রতি দেননি। আমরা যদি নিষ্ঠার সঙ্গে দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি, তাহলে আমাদের জীবন যাপনের মান সম্পূর্ণ ইসলামী রীতি অনুযায়ী হবে। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে নামাজ অন্যতম। নামাজ কায়েম করা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধিমান মুসলমানের জন্য ফরজ বা অবশ্য কর্তব্য। এ নামাজ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি নেয়ামত। নামাজ সর্বাপেক্ষা উত্তম দোয়া বা প্রার্থনা। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের সব ধরনের অপরাধ, অন্যায় ও পাপ থেকে বাঁচতে পারি। নামাজই আমাদের সব ধরনের মন্দ কাজ থেকে রক্ষা করতে পারে। 

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন "নিশ্চয়ই নামাজ (নামাজিকে) অশ্লীলতা এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। "(সুরা আনকাবুত)।

এখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কেবল নামাজই মানুষকে সব মন্দ কাজ থেকে মুক্ত রাখে। যদি আমরা আমাদের জীবনকে ইসলামের আদর্শ অনুযায়ী সুন্দরভাবে পরিচালিত করতে চাই, তাহলে নামাজ কায়েম করার কোনো বিকল্প নেই।

নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে হুজুর (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ মুমিনের জন্য মিরাজস্বরূপ।’ 

 
আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করতে পারি।
 

হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সাহাবিদের উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘বল তো আমাদের মধ্যে কারো দরজার সামনে যদি একটি নদী থাকে এবং সে যদি তাতে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে, তবে তার (শরীরে) কি কোনো ধরনের ময়লা থাকতে পারে? তারা বললেন, কোনো ময়লা থাকতে পারে না।’
রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘দিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্ত এরূপ। আল্লাহ তায়ালা সালাত দ্বারা পাপ মোচন করেন (মুসলিম)।


এই হাদিস থেকে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয় যে সব পাপ থেকে বাঁচার সর্বোত্তম মাধ্যম হলো নামাজ।


হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরো বলেছেন, ‘যে বিষয়টি আমাদের কাফির ও মুশরিকদের থেকে পৃথক করে তা হলো নামাজ। যে ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ত্যাগ করে, সে কুফরির মধ্যে নিপতিত হয়।’ (তিরমিজি)।
 

যদি নামাজ পড়া সত্ত্বেও কেউ দোষত্রুটিমুক্ত না হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে, তার নামাজ প্রকৃত নামাজ নয়। নামাজের মাধ্যমে আমরা আমাদের আত্মা সবল ও সুস্থ রাখতে পারি, অন্যায়-অশ্লীলতা এবং মন্দ কাজ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি। যেসব কুঅভ্যাস কিছুতেই দূর হয় না, তা কেবল নামাজের মাধ্যমেই দূর করা সম্ভব। যদি কেউ এ মাধ্যমকে গ্রহণ করে, তাহলে অতি অল্পকালেই আশ্চর্য ফল পাবে, ইনশাআল্লাহ্। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন।