নবজাতক শিশুর যত্ন ও কিছু পরামর্শ

জন্মগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে শিশু সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি পরিবেশে চলে আসে। এমনিতেই সে থাকে খুবই নাজুক। একটু অযত্ন বা অসচেতনতা ডেকে আনতে পারে ভয়ঙ্কর পরিণতি।

►► আসুন দেখে নেয়া যাক নবজাতকের যত্নের জন্য কি কি করা যেতে পারে::
 

♦♦♦ যত দ্রুত সম্ভব বাচ্চাকে মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। সম্ভব হলে জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে শালদুধ খেতে দিন। অনেক সময় মায়ের বুকে দুধ আসতে একটু দেরি হয়, সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

♦♦♦ বাচ্চার ছয় মাস বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ ব্যতীত অন্য কোনো খাবারের কোনোই প্রয়োজন নেই। এমনকি পানিও নয়। তাই চিনি, মধু, তালমিছরি এগুলো কোনো অবস্থাতেই তার মুখে দেবেন না।

♦♦♦ বাচ্চাকে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে গরম রাখুন। মায়ের পেটে সে তুলনামূলক গরম আবহাওয়ায় থাকে তাই তাকে একটু উষ্ণতায় রাখুন।

♦♦♦ বাচ্চার গা কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে মুছে দিন। তবে গরমের দিনে তিন দিন বয়স পর্যন্ত ও শীতের দিনে ১৫ দিন বয়স পর্যন্ত গোসল করানোর কোনো প্রয়োজন নেই।

♦♦♦ নাভি না পড়া পর্যন্ত তা পরিষ্কার এবং শুষ্ক রাখুন। নাভিতে কোনো ক্রিম বা লোশন লাগাবেন না। কোনো কিছু করার আগে ডাক্তারের কাছে জেনে নিন।

♦♦♦ বাচ্চার প্রস্রাব এবং কালো রঙের পায়খানার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। বাচ্চা যদি জন্মের ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রস্রাব ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কালো রঙের পায়খানা না করে তবে অতি দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

♦♦♦ বাচ্চাকে জন্মের পর, ৪ দিন এবং ২৮ দিন বয়সে ভিটামিন কে ইনজেকশন মুখে খাওয়াতে হবে।

♦♦♦ প্রতি ঘণ্টায় বাচ্চাকে বুকের দুধ দিতে হবে। তবে প্রথম দিকে মায়ের বুকে দুধ কম থাকে, এ সময় বাচ্চার চাহিদাও কম থাকে।

♦♦♦ নবজাতকের পরিধেয় হতে হবে পাতলা সুতির। কোনো এমব্রয়ডারি, সুতা বা লেসের কাজ করা কাপড় না দেওয়াই ভালো। দোকান থেকে কিনে এনেই বাচ্চাকে কাপড় পরানো যাবে না। প্রথমে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে ও খসখসে ভাব দূর করতে হবে।

♦♦♦ জন্মের পরপরই মাথার চুল কাটার কোনো দরকার নেই। কারণ বাচ্চার মাথার উপরিভাগ তখনো সম্পূর্ণ তৈরি হয় না। তাই চুল কাটতে গিয়ে ওই স্থান কেটে যেতে পারে, ইনফেকশন হতে পারে, বাচ্চার ব্রেইনে আঘাত পেতে পারে।

♦♦♦ বাচ্চার গায়ে তেল, ভ্যাসলিন, লোশন ব্যবহার না করাই ভালো। এসবে বহু শিশুর ত্বকে র্যাশ বা এলার্জি হয়। যদি একান্তই ব্যবহার করতে চান তবে প্রথমে শরীরের কিছু অংশে একটু লাগিয়ে পরীক্ষা করে দেখুন ত্বকে র্যাশ বা এলার্জি হয় কি-না।

♦♦♦ বাচ্চাকে সব সময় ডায়াপার পরিয়ে রাখবেন না। দীর্ঘসময় ডায়াপার পরিয়ে রাখলে ঘা-ইনফেকশন হতে পারে।

♦♦♦ বাচ্চাকে স্পর্শ করার আগে সাবান পানি বা হেক্সিসল বা স্পিরিট দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।

♦♦♦ বাচ্চার গোসলের পানি অন্তত ১০ মিনিট ফুটিয়ে তারপর ঠাণ্ডা করে নিন। গরম পানিতে অসিদ্ধ ঠাণ্ডা পানি মেশাবেন না। গোসলের পানিতে এন্টিসেপটিক যেমন স্যাভলন, ডেটল ইত্যাদি মেশাবেন না। গোসলের স্থান হবে পরিষ্কার।