রক্ত দান সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তরঃ

1. রক্ত দানের জন্য সর্বনিম্ন বয়স কত?
--> আপনি ইচ্ছে করলে ১৮ বছর বয়সের পর থেকেই রক্ত দান করতে পারেন।
[ বিঃদ্রঃ কেউ যখন স্বেচ্ছায় নিজ রক্ত অন্য কারো স্বার্থে দান করে, তাকে রক্তদান বলে। এ কারণে রক্তদাতার অবশ্যই সম্মতির প্রয়োজন আছে এবং এর মাধ্যমে পূর্ণ বয়স্ক নয় (১৮ বছরের নিচে) এমন কারো রক্ত নেওয়া নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এখনকার সময়ে অবশ্য ১৭ বছর হলেই রক্ত দেওয়ার উপযুক্ত ধরা হয়। ]


2. রক্ত দান কি নিরাপদ ?
--> রক্ত দান করা সম্পূর্ন নিরাপদ।
 

3. রক্ত দানের কি কোন সাইড এফেক্ট আছে ?
--> না রক্ত দানের কোন সাইড এফেক্ট নাই।
 

4. রক্ত দানে কতটুকু রক্ত নেওয়া হয় ?
--> আপনার শরীর থেকে প্রায় ৩৮০-৪০০মি.লি. রক্ত নেওয়া হয়।
 

5. কতদিন পর পর রক্ত দান করা যায় ?
-৩ মাস পর পর আপনি রক্ত দান করতে পারেন।
 

6. রক্ত দান করতে কত সময় লাগে ?
--> ৫ থেকে ৭ মিনিট, সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট সময় লাগে। বিশ্রাম এবং অন্যান্য সময় ধরলে সব মিলিয়ে ১
ঘন্টা লাগতে পারে।
 

7. রক্ত দান করতে ব্যাথা লাগে কি?
--> জ্বী না। রক্ত দানের সময় আপনি ব্যথা পাবেন না।
 

8. রক্ত দানের ফলে আমি কি অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারি ?
--> না অজ্ঞান হবার সম্ভাবনা নেই। তবে রক্ত দান করার পর অবশ্যই বিশ্রাম নিবেন।
 

9. কিভাবে রক্ত নেওয়া হয় ?
--> প্রথমে বাম হাত থেকে আধা সিরিজ রক্ত নেওয়া হয়, ক্রস ম্যাচিং ও অন্যান্য পরীক্ষা করার জন্য।তারপর আপনার ডান হাতের বাহুতে একটি সিরিঞ্জ দিয়ে রক্তটানার ব্যাবস্থা করা হয়। নিডিলটি ঢোকানোর সময় সামান্য ব্যথা লাগে। তারপর আর ব্যথা লাগবে না। আপনার রক্ত একটি নলের মাধ্যমে স্যালাইনের মত একটি ব্যাগে সহজেই জমা হয়ে যায়।
 

10. রক্ত দানের জন্য সর্বনিম্ন ওজন কতটুকু ?
--> এটা যদিও রক্তদাতার উচ্চতার ওপর নির্ভর করে তবে গড়পড়তায় একজন ব্যক্তি রক্ত দান করতে চাইলে তার ওজন ৪৭ কেজির বেশী হতে হবে।
 

11. রক্ত দানের পর আমার হাত ফুলে বা রক্ত জমাট বেঁধে বা ইনফেকশন হতে পারে কি?
--> হাতের যেখান থেকে রক্ত নেয়া হয়েছে সেখানে ম্যসেজ করবেন না। ফুলে যাওয়া, জমাট বাধা বা ইনফেকশনের সম্ভবনা নেই বললেই চলে।
 

12. এলকোহল (মদ) খাবার পর রক্ত দান করা যায় কি?
--> না। রক্ত দেবার আগের ২৪ ঘন্টার মধ্যে এলকোহল পান করলে রক্ত দান করা যাবে না। পান করার ২৪ ঘণ্টা পর রক্ত দিতে পারেন।
 

13. এন্টিবায়টিক ওষুধ খাওয়া অবস্থায় রক্ত দান করা যাবে কি ?
--> না। এন্টিবায়োটিক খাবার অন্তত ৭ দিন পর, সম্পূর্ণ সুস্থ হলে তারপর রক্ত দান করা যাবে।
 

14. ব্লাড প্রেশারের রোগী রক্ত দান করতে পারবেন কি?
--> হ্যাঁ। যদি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে আপনি রক্ত দান করতে পারেন।
 

15. শিশু বুকের দুধ খায়, এ অবস্থায় রক্ত দান করা যাবে?
--> না। যখন শিশু শুধুমাত্র বুকের দুধ পান করে তখন রক্ত দান করা যাবে না।
 

16. শিশুর জন্মের কতদিন পর মা রক্ত-দান করতে পারেন?
--> শিশুর জন্মের ১৫ মাস পর মা রক্তদান করতে পারেন।
 

17. সর্দি লাগা/জ্বর থাকা অবস্থায় রক্ত দান করা যাবে?
--> ঠান্ডা বা সর্দি লাগা অবস্থায় যেহেতু একটি জীবানু সংক্রামন থাকে সেহেতু রক্ত দান করা যাবে না।
 

18. জন্ম নিয়ন্ত্রন পিল খাবার সময় রক্ত দান করা যাবে কি?
--> হ্যা। জন্ম নিয়ন্ত্রন পিল খাবার সময় রক্ত দান করা যাবে।
 

19. ডায়বেটিক রোগী রক্ত দান করতে পারেন?
--> না। যে সমস্ত ডায়াবেটিক রোগী ইনসুলিন গ্রহন করেন তাদের রক্ত দান না করাই ভালো। তবে বিশেষ প্রয়োজনে তারা রক্ত দান করতে পারেন।
 

20. রোগের ভ্যাকসিন নেবার পর রক্ত দান করা যাবে?
--> না। ভ্যাকসিন নেবার অন্তত ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত রক্ত দান করা যাবে না।


21. রক্ত দানের আগে আমার কি করা উচিত ?
--> আগের রাতে ভাল ভাবে ঘুমান। সকালে ভাল নাস্তা করুন। ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় (চা, কফি)খাবেন না। বেশী চর্বিযুক্ত খাবার খাবেন না। পর্যাপ্ত পানি পান করুন।


22. রক্ত দানের সময় কি করা উচিত?
--> হাফ হাতা পোষাক পরুন। রিল্যাক্স থাকুন। রক্তদান শেষে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।


23. রক্ত দানের পর কি করা উচিত ?
--> রক্ত দানের পর পর্যাপ্ত তরল পান করুন অন্তত ৪ গ্লাস (স্যালাইন, ফলের রস)। ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত ভারী কাজ করবেন না। মাথা ঘুরলে শুয়ে পড়ুন এবং (পায়ের নীচে একটি বালিশ দিয়ে) পা মাথার চেয়ে উচুতে রাখুন। দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন। ধুমপান করবেন না ৫ ঘণ্টা। সর্বপরি, নিয়মিত রক্ত দান করুন।